প্রতিদিন কেন শসা খাবেন? জেনে নিন ১৫টি উপকারিতা?

প্রতিদিন কেন শসা খাবেন? জেনে নিন ১৫টি উপকারিতা?
শসা একটি উপকারি খাবার। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার। গ্রীষ্মকালীন সবজি হলেও এখন সারা বছর বাজার শসা পাওয়া যায়। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় শসা একটি পরিচিত নাম। কারণ বেশিরভাগ সালাদেই ব্যবহার করা হয় এই সবজি। হাইড্রেটিং সবজিগুলোর মধ্যে উপরের দিকেই থাকে শসার নাম। শসা শরীরের জন্য খুবই ভালো। বেশির ভাগ রোগের ক্ষেত্রেই রোগীরা শসা খেতে পারেন, তার কারণ শসার খাদ্য ও পুষ্টিগুণ। শুধু রূপচর্চায় নয়, শরীরকে ভেতর থেকে ঠিক রাখতে শসা নিয়মিত খাওয়া দরকার। শসায় ভিটামিন বি, থিয়ামিন (বি১), রাইবোফ্লাবিন (বি২), নিয়াসিন (বি৪), প্যানটোথেনিক, বি৫, বি৬, ফোলেট (বি৯), ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, গ্লুকোজ, স্নেহপদার্থ, ফাইবার, প্রোটিন, বিভিন্ন ধরনের খনিজ পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম, লোহা, সোডিয়াম, দস্তা, ক্যালোরি, সব থেকে বেশি থাকে জলীয় পদার্থ।

শসা খাওয়ার আরও অনেক দুর্দান্ত উপকারিতা রয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক-
১। জল শূন্যতায়ঃ
শরীরে জলের চাহিদা মেটাতে শসা খুবই উপকারী। একটি শসায় প্রায় ৯৫ শতাংশ জল থাকে। দুর্বলতা কাটিয়ে দ্রুত সতেজ করে তোলে।
২। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করেঃ
শসা ডায়াবেটিস বা সুগারের সমস্যা প্রতিরোধ করে। শসায় থাকা বিশেষ উপাদান রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে পারে।
৩। কিডনির পাথর দূর করেঃ
শসার জলীয় অংশ দেহের বর্জ্য ও দূষিত পদার্থ বের করতে দারুণ কাজ করে। নিয়মিত শসা খেলে কিডনিতে সৃষ্ট পাথর গলে যেতে সহায়তা হয়। ইউরিনারি, ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যার সমাধানে বেশ সাহায্য করে শসা।
৪। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ
১০০ গ্রাম শসার রস খালি পেটে রোজ সকালে খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আসে। সকালের খাবার ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে খেতে হবে। মাসখানেক এই ভাবে খেলে উপকার পাবেন।
৫। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ
শসার রস নিয়মিত খাওয়ার ফলে মস্তিস্কে ও ধমনীতে জমে থাকা প্রচুর এলডিএল হ্রাস করে। ফলে স্মৃতিশক্তিও বৃদ্ধি পায়।
৬। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ
শসায় আছে প্রচুর ভিটামিন সি, ম্যাগনিসিয়াম, সিলিকা, পটাসিয়াম ও আঁশপদার্থ। এগুলি শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। শসার উপাদান উচ্চ এবং নিম্ন রক্তচাপ দু’ই নিয়ন্ত্রণ করে। হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যায় উপকার করে।
৭। ওজন হ্রাস করেঃ
শসায় উচ্চমাত্রায় জল থাকে। নিম্নমাত্রায় ক্যালরি থাকে। ফলে দেহের ওজন কমাতে আদর্শ এটি।
৮। হজমে সহায়তা করেঃ
কাঁচা শসা চিবিয়ে খেলে ভালো হজম হয়। এরেপসিন নামক অ্যানজাইমের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস, অ্যাসিডিটির ক্ষেত্রেও উপকারী।
৯। গেঁটেবাতঃ
প্রচুর পরিমাণে সিলিকা থাকে এতে। গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেলে দেহের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে। গেঁটেবাতের ব্যথা কমে। আর্থ্রাইটিসের ব্যথাও উপশম করে।
১০। মাথাব্যথায় উপকারীঃ
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর যে মাথাব্যথা হয়, শরীরে অবসাদ আসে তা শসার উপাদান সমূহ যেমন – ভিটামিন বি ও সুগার এ সব দূর করে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েক টুকরো শসা খেলে ঘুম থেকে ওঠার পরের এই সমস্যা দূর হয়।
১১। ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়ঃ
শসায় বিশেষ তিনটি আয়ুর্বেদিক উপাদান থাকে। এটি জরায়ু, স্তন ও মূত্রগ্রন্থিসহ বিভিন্ন স্থানে ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
১২। চোখের যত্নে সহায়তা করেঃ

শসা গোল করে কেটে চোখের পাতার ওপর রাখলে চোখের পাতায় জমে থাকা ময়লা অপসারিত হয়, তেমনি চোখের জ্যোতি বাড়ায়। এমনকি চোখের প্রদাহ প্রতিরোধক উপাদানও থাকে এতে। ছানি পড়া আটকায়।
১৩। চুল ও নখের জন্য উপকারীঃ
শসায় থাকা খনিজ চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে। এ ছাড়া সালফার ও সিলিকা চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
১৪। মুখের গন্ধ দূর করেঃ
শসা দেহের বর্জ্য ও দূষিত পদার্থ, টক্সিন দূর করে। নিয়মিত খেলে দুর্গন্ধ, সংক্রমণ, আক্রান্ত মাড়ির চিকিৎসা করে। গোল করে কেটে এক টুকরো শসা জিভের ওপরে তালুতে চাপ দিয়ে আধ মিনিট রাখলে তা বিশেষ বিক্রিয়া ঘটিয়ে মুখের জীবাণু ধ্বংস করে। নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ, দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর করে।
১৫। ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল করেঃ
এর ঠাণ্ডা ও আর্দ্র রাখার উপাদান মলিন ও শুষ্ক ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন বি-নায়াসিন, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন সি এবং জিংক ত্বকের উজ্জ্বলতা রক্ষা করে। বিউটি ক্রিমের বদলে নিয়মিত শসা খেলে ত্বক উজ্জ্বল করতে সহায়তা করবে।
Related Video:
💡আপনারা চাইলে আমার ব্লগিং চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন।
লিংক: 👉 Worldly Healthy Life YouTube Channel
🟢উচ্চ রক্তচাপ -এর রোগীরা যেসব নিয়ম মেনে চলবেন এবং যেসব খাবার খাবেন